অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকার আগামী বাজেট প্রণয়নে কোনোভাবেই বিরাট একটি গ্যাপ রেখে এগোবে না। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, বড় বড় মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য ঋণ নিয়ে বাজেটের ঘাটতি পূরণ করা হবে না। অর্থাৎ, ব্যাংক থেকে বড় ঋণ নিয়ে বা টাকা ছাপিয়ে এসব প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হবে না। সরকারের বাজেট পরিকল্পনা হবে সঠিকভাবে পরিকল্পিত এবং বাস্তবিক।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনে ক্রয় কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, বর্তমানে তেলের কিছু ঘাটতি রয়েছে, আর এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার রাইস ব্রান অয়েল আমদানির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এছাড়া, নদী সংরক্ষণ এবং খাদ্য গুদাম নির্মাণের জন্য একাধিক প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের নদীগুলোর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। যদি এই পরিস্থিতি সমাধান না করা হয়, তাহলে বর্ষা মৌসুমে অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই নদী সংরক্ষণের জন্য ৬টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী এলএনজি (লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) আমদানি নিয়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপগুলো দেশের তেল ও গ্যাসের সংকট কমাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এনবিআরের নতুন অর্ডিন্যান্স নিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তারা তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে, তবে তাদের স্বার্থ সংরক্ষিত রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এনবিআর পলিসি তৈরি এবং বাস্তবায়ন আলাদা কাজ। সব দেশে পলিসি এবং ইমপ্লিমেন্টেশন ডিভিশন আলাদা থাকে। এটি আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস।” অর্থাৎ, এনবিআরের কাজ হবে আদায় করা, এবং তাদের পলিসি বিভাগের সদস্যরা প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন।
রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গতবারের তুলনায় রাজস্ব আদায় ২ শতাংশ বেড়েছে, যা হতাশাজনক নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করি, আগামী বাজেটের বাস্তবায়নেও গতবারের তুলনায় কোনো বড় ঘাটতি হবে না।”
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, সরকারের বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া সব সময় বাস্তবমুখী এবং দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিত। তবে, বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় ছোট হবে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা সময় হলেই জানা যাবে, তবে আমি নিশ্চিত যে বাজেট বাস্তবায়নে কোনো বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে না।”
এভাবে, সরকার আগামী বাজেটে উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে দেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে কাজ করবে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।