ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের এক বছর পার হলেও এখনও রহস্যের জট খুলছে না। তার মরদেহের খণ্ডাংশ মিললেও, পুরো ঘটনার নেপথ্য কাহিনি এখনো স্পষ্ট নয়। পরিকল্পনাকারী, সহযোগী, কিংবা প্রকৃত উদ্দেশ্য- সবই রয়ে গেছে বহু প্রশ্নের মুখোমুখি।
২০২৩ সালের ১২ মে কলকাতার বরাহনগরে এক বন্ধুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন আনার। ১৩ মে সেই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনবারের সাবেক এমপি। টানা ৯ দিন নিখোঁজ থাকার পর ২২ মে প্রকাশ্যে আসে তার নির্মম হত্যার ঘটনা। নিউটাউনের সঞ্জীভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়। পুলিশ জানায়, হত্যার আলামত গোপন করতে তার মরদেহ টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে তদন্ত চালালেও এখনও মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন ধরা পড়েননি। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বলে জানা যায়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে ৯ জন গ্রেপ্তার হলেও তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও ত্রাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবুসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা এখন কারাগারে।
আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন গত বছরের নভেম্বরের শেষে ভারতের ফরেনসিক বিভাগে ডিএনএ পরীক্ষা দিয়ে আসেন। জানা যায়, উদ্ধারকৃত দেহাংশের সাথে তার ডিএনএ মিলেছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
একজন সাবেক এমপিকে এভাবে দেশের বাইরে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসেও বিরল। অথচ হত্যার এক বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পায়নি তার পরিবার, অনুসন্ধানী গণমাধ্যম কিংবা সাধারণ মানুষ।
আনারের কালীগঞ্জের বাড়িতে সম্প্রতি এতিমখানার শিশুদের দিয়ে কোরআন খতম ও মিলাদ আয়োজন করা হয়। শোকাহত পরিবার এখনও অপেক্ষায়- একদিন হয়তো ন্যায়বিচার ও সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াবে আনার হত্যার প্রকৃত রহস্য।